ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন এডভোকেট মোহাম্মদ সেলিম মিয়া। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির একজন সক্রিয় কর্মী ও আন্দোলন-সংগ্রামের অংশীদার।
১৯৮৬ সালে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার মৌজাআটা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সেলিম মিয়া। তাঁর বাবা মরহুম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম (চান মাস্টার) ছিলেন হাড়িয়া বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যেও রাজনৈতিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রয়েছে তাঁর চাচা মরহুম এডভোকেট মো. আশরাফুল ইসলাম ছিলেন ইসলামপুর উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং বড় ভাই ইসলামপুর সামাদ পারভেজ মেমোরিয়াল মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও উপজেলা বিএনপির নির্বাহী সদস্য।
শিক্ষাজীবনে শুরু থেকেই মেধাবী সেলিম মিয়া ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো জিপিএ পদ্ধতিতে হাড়িয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়ে ২০০৩ সালে মানবিক বিভাগে এইচএসসি সম্পন্ন করেন, যেখানে তিনি ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেন। জিপিএ পদ্ধতি না থাকলে তিনি বোর্ড স্ট্যান্ড করতেন বলেও সহপাঠীরা মনে করেন।
ঢাকা কলেজে অধ্যয়নকালেই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ২২০তম স্থান অর্জন করে আইন বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি এলএলবি (অনার্স) ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন এবং বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নেন।
২০১০ সালে বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত হরতালে অংশ নিয়ে গ্রেফতার হন এবং ১৭ দিন কারাভোগ করেন। তিনি ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল হাজী মুহম্মদ মুহসিন হল কমিটির সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আইন সম্পাদক।
২০১২ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে এডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর সেলিম মিয়া পেশাগত জীবনে দ্রুত সাফল্য অর্জন করেন। ২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এবং ২০২৫ সালে আপিল বিভাগে প্র্যাকটিসের অনুমতি পান। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক, বহুজাতিক কোম্পানি, এনজিও এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ প্রায় ২৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের প্যানেল আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর পরিচালিত একাধিক মামলা ডিএলআরসহ বিভিন্ন ল’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সমাজসেবায়ও সম্পৃক্ত। ইসলামপুর উপজেলাসহ জামালপুরের বিএনপির নির্যাতিত নেতাকর্মীদের তিনি বিনা ফিতে আইনগত সহায়তা প্রদান করেছেন, যা স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে আজও অম্লান। বর্তমানে তিনি ইসলামপুর উপজেলা বিএনপির নির্বাহী সদস্য এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সুপ্রিম কোর্ট আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
জনসেবাকে জীবনের মূল লক্ষ্য হিসেবে দেখেন এডভোকেট মোহাম্মদ সেলিম মিয়া। তাঁর ভাষায়—
ভালো ও মেধাবী মানুষ যদি রাজনীতি থেকে দূরে থাকে, তবে খারাপরাই দেশ চালাবে। যোগ্য মানুষ রাজনীতিতে অংশ না নিলে অযোগ্যদের দ্বারা শাসিত হতে হবে।
তাঁর বিশ্বাস, জনপ্রতিনিধিরাই বৃহৎ পরিসরে মানুষের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ পান, যদি তাদের মধ্যে সৎ ইচ্ছা ও নিষ্ঠা থাকে। তাদের মধ্যে এডভোকেট মোহাম্মদ সেলিম মিয়া একজন মেধাবী আইনজীবী, ত্যাগী রাজনীতিক ও মানবসেবায় নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি। দীর্ঘদিনের আন্দোলন, কারাভোগ ও দলের প্রতি নিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তিনি ইসলামপুরে বিএনপির একজন নির্ভরযোগ্য মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

0 $type={blogger}:
Post a Comment